গণশুনানি কার্যক্রম পরিচালনা
সরকারই সেবা প্রাপ্তিতে হয়রানি, অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধের উদ্দেশ্য কমিশন গণশুনানিকে অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি হচ্ছে সেবাগ্রহীতা জনগণ ও সরকারি সেবাপ্রদানকারী প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীগণের মধ্যে পারস্পারিক আস্থা বৃদ্ধির একটি মাধ্যম। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৭(১) অনুচ্ছেদ অনুসারে, প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। তাই সরকারি সেবাপ্রাপ্তিতে হয়রানি, অনিয়ম, দুর্নীতি ও দীর্ঘসূত্রিতা দূর করা অতীব জরুরি। প্রতিটি গণশুনানিতে কমিশনের চেয়ারম্যান অথবা কমিশনার উপস্থিত থেকে গণশুনানি পর্যবেক্ষণ করেন এবং সমস্যা সমাধানে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন। প্রতিটি গণশুনানি পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ যেমন সরকারি সেবা গ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে সচেতন নন, তেমনি সরকারি সেবা প্রদানে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীগণ সঠিক সময়ে সেবা প্রদান না করে নাগরিকদের বঞ্চিত করেন এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানি করেন।
এসকল শুনানির মাধ্যমে অনেক সমস্যার যেমন তাৎক্ষনিক সমাধান করা হচ্ছে, তেমনি দুর্নীত ও অনিয়মের উৎস শনাক্তকরণ, প্রকৃতি ও ব্যাপকতা চিহ্নিত করে দুর্নীতি প্রতিরোধে বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারি দপ্তর সমূহের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কমিশনকে নিরলসভাবে সহযোগিতা করছেন। ২০১৬ সালে দুদক গণশুনানি পরিচালনার জন্য যে নীতিওমালা প্রনয়ন করে, বর্তমানে তার ভিত্তিতেই গণশুনানি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
এ গণশুনানি (Public Hearing) স্থানীয় গণ্যমান্য সুধীমন্ডলী, জনপ্রতিনিধি, সরকারি সেবা গ্রহীতা, মিডিয়া ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, আইনজীবি, এনজিও এবং অন্যান্য আগ্রহী ব্যক্তিবর্গসহ সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তা উপযুক্ত ব্যক্তিবর্গকে পত্রযোগে ও টেলিফোনে উপস্থিতির আমন্ত্রণ জানান। প্রয়োজনে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাথেও পরামর্শ গ্রহণ করা হয়।
গণশুনানিতে প্রত্যাশিত ফলাফল:
সংবিধান অনুসারে সকল সময় জনগণের সেবা করার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য। জনগণকে সেবা প্রদান করা সরকারি কর্মে নিযুক্ত ব্যক্তিদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। গণশুনানি এ দায়িত্ব পালনে একটি সামাজিক দায়বদ্ধতা পদ্ধতি। কমিশন প্রতিটি সরকারি দপ্তরকে স্থানীয়ভাবে জবাবদিহিমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করার লক্ষ্যে গণশুনানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নিয়মিত গণশুনানি ও ফলোআপ গণশুনানির মাধ্যমে অনেক সমস্যার সমাধান হচ্ছে। বর্তমানে কমিশন গণশুনানিতে গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ করছে। অনিয়ম, হয়রানি, কিংবা দুর্নীতিমুক্ত সরকারি পরিষেবা প্রাপ্তিতে গণশুনানি কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা করা যায়।
ই-মেইল: dg.prevention@acc.org.bd