Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ৫ মার্চ ২০১৯

টিআইবি’র অবস্থান একচোখা হবে আশা করি না--- দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ


প্রকাশন তারিখ : 2019-03-05

আজ দুদক প্রধান কার্যালয়ে  টিআইবি’র চলমান কার্যক্রমের মূল্যায়ন ও ভবিষ্যৎ কর্মকৌশল নিরুপণ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ডিএফআইডি, সুইডিশ ও ড্যানিশ দূতাবাস এর সহায়তায় জেনেভা-ভিত্তিক নীতি ও কৌশল বিশেষজ্ঞ ম্যাথিয়াস বস এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল দুদক চেয়ারম্যানের সঙ্গে মতবিনিময় কালে  তিনি এ মন্তব্য করেন।


প্রতিনিধি দলের প্রধান ম্যাথিয়াস বস দুদক চেয়ারম্যান এর নিকট টিআইবির কার্যক্রম, তাদের সম্পর্কে এদেশের জনগণের ধারণা, দুর্নীতি দমন কমিশনের সাথে সম্পর্কসহ সার্বিকভাবে টিআইবি সম্পর্কে দুদক চেয়াম্যানের সুচিন্তিত মতামত, সমালোচন এবং পরামর্শ জানতে চান।


জবাবে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, জনগণের মাঝে টিআইবি’র ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে। তবে এর কিছু সমালোচনাও শোনা যায়। টিআইবি দেশের  শাসন প্রক্রিয়া তথা সরকার বা সরকারি সংস্থার  যে কোনো ধরনের ত্রুটি-বিচ্যুতিতেই উচ্চকণ্ঠ থাকে।  তিনি বলেন শুধু সম্যসা বা ত্রুটি তুলে ধরা টিআইবির কাজ হতে পারে না বরং এসব সমস্যা সমাধানের পথ বাতেলে দেওয়ায়র সুযোগ তাদের রয়েছে। সমস্যা শনাক্তকরণের পাশাপাশি এর কারণ এবং তা থেকে উত্তরণের উপায় বের  করা এ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব হওয়া উচিত।


তিনি বলেন সরকারি-বেসরকারি এমনকি বৈদেশিক অর্থে পরিচালিত প্রতিটি সংস্থারই অর্থের মালিক জনগণ। তাই টিআইবিসহ প্রতিটি সংস্থার বাজেট, আয়-ব্যয়ের হিসাব স্বচ্ছ থাকা উচিত। তাদের আয়-ব্যয়, কর্মপরিকল্পনা, অডিট কার্যক্রম  শুধু ওয়েবসাইটে না রেখে গণমাধ্যমসহ  অন্যান্য মাধ্যমেও মানুষকে অবহিত করা উচিত।


তিনি বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের সাথে টিআবি’র আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিক  উভয় প্রকার সম্পর্ক রয়েছে। তবে অনানুষ্ঠিক সম্পর্ক নিয়ে কিছু বলতে চাই না, কারণ এটা বেশ ফলপ্রসূ। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সাথে কমিশনের দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং উত্তম চর্চার বিকাশে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা হয়েছে। এই সমঝোতা স্মারকের আলোকেই টিআইবি’র সাথে যৌথভাবে গণশুনানিসহ বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।


তিনি বলেন, দুদক এর কার্যক্রম নিয়ে টিআইবি’র সমালোচনাকে দুদক সবসময় সাধুবাদ জানায়, তবে দুদক বা  অন্য কোনো সংস্থার সমালোচনা করতে হলে তাদেরকে দেশের সমসাময়িক বাস্তবতা, পরিস্থিতি এবং সংস্কৃতিকে অনুধাবন করতে হবে। সমালোচনার সাথে পরিত্রাণের উপায়ও বলতে হবে। সরকার বা সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান , রাজনৈতিক দল কোনো  ভালো কাজ করলে তার প্রশংসাও করা উচিত। তাদের একচোখা হলে চলবে না, দুচোখা হতে হবে।


তিনি বলেন টিআইবি যাদের অর্থায়নে পরিচালিত হয় তাদের অবশ্যই প্রত্যঅশা থাকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজাকি এবং সুশাসনের উন্নয়নে টিআইবি ভূমিক রাখবে।  টিআইবি সরকার এবং রাষ্ট্রীয় সংস্থাসমূহকে আনুষ্ঠানিক  কিংবা অনানুষ্ঠানিকভাবে পরামর্শ দিতে পারে।


টিআইবির গবেষণা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, টিআইবির গবেষণার মেথডোলোজি স্বচ্ছ হতে হবে। তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মাধ্যমিক ডাটা (ঝবপড়হফধৎু ফধঃধ) ব্যবহার করে অথবা ফোকাসগ্রুপ আলোচনার মাধ্যমে ডাটা সংগ্রহ করে। তাদের উচিত প্রাথমিক ডাটা (চৎরসধৎু উধঃধ) ব্যবহার করা। তাহলে তাদের গবেষণার ফলাফল ও  বিশ্লেষণে ত্রুটি কম থাকবে এবং তাদের প্রতিবেদনের  বিশ^াসযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।


তিনি বলেন টিআইবি’র  একটি সুনির্দিষ্ট কর্মপরিধি থাকা উচিত। সব বিষয়ে টিআইবি’র কথা বলা কোনো কোনো ক্ষেত্রে তাদের ভাবমূর্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকা উচিত।  তারা দুর্নীতি, মেগাপ্রজেক্ট এবং সরকার নিয়ে যতটা উচ্চকিত । আবার মানসম্মত শিক্ষা, জনপ্রশাসনের নিয়োগ, বদলি, পদোন্নতিসহ সুশানের  অন্য যে সকল সূচক রয়েছে এগুলোর ক্ষেত্রে  তাদের কার্যক্রমকে অনেকেই ততোটা জোরালো বলে মনে করেন না। অর্থাৎ তাদের সুনির্দিষ্ট কর্মপরিধি মানুষকে জানানোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।


সিপিডি, বেলাসহ অন্যান্য সংস্থার সাথে টিআইবির যৌথ সম্পর্কের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ার‌্যম্যঅন বলেন,  এসব প্রতিষ্ঠানের সমন্বিত উদ্যোগ অবশ্যই ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।


 এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের পরামর্শক মাহিন সুলতান এবং টিআইবি’র ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার জাফর সাদিক।